
ভারতের অন্যতম প্রধান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ISRO-তে কিভাবে কাজ করা যায়?
হ্যাঁ ঘন্তুদা, ঠিক বলেছ । অ্যাস্ট্রোস্যাট-এর ব্যাপারে তো আমি ‘বিজ্ঞান’ পত্রিকা-তেই পড়েছি [১]। অ্যাস্ট্রোস্যাট হল কৃত্রিম উপগ্রহের উপর স্থাপিত ভারতবর্ষের প্রথম দূরবীন যা দিয়ে অনেক বর্ণের আলো একসাথে ধরা যায়। তাই না ঘন্তুদা?
একদম ঠিক ঝন্তু। অ্যাস্ট্রোস্যাট ইসরো তথা আমাদের দেশের জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
জান ঘন্টুদা, মাঝে মাঝে খুব মনে হয় এমন একটা জায়গা যদি কোনদিন নিজের চক্ষে দেখতে পেতুম তাহলে জীবনটাই সার্থক হয়ে যেত।
তাতে অসুবিধে কি নান্টু, শুধু দেখা কেন; তুই চাইলে ভবিষ্যতে ওখানে চাকরীও তো করতে পারিস।
কি বলছ ঘন্টুদা, আমিও ইসরো-তে চাকরি পেতে পারি? কি করতে হবে তার জন্য ?
নিশ্চয়ই পারিস। শুধু তুই কেন, এই দেশের যে কোন ছেলে মেয়ে যদি ঠিক করে পড়াশোনা করে শুধুমাত্র ৬৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্নাতক হতে পারে তাহলেই সে ইসরোতে চাকরীর সুযোগ পেতে পারে।
কি নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে গো তার জন্য?
ইসরো প্রধানত কারিগরি বিভাগের ছাত্রছাত্রীদেরকেই বেশি সুযোগ দেয়। সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে ৬৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে B.E / B.Tech ডিগ্রি পেলেই ৩৫ বছর বয়সের চেয়ে কম বয়সী যে কেউ ইসরোতে চাকরীর জন্য আবেদন করতে পারে। শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে স্থাপত্য শাখার ছাত্রছাত্রীদের জন্যও সুযোগ আসে।
তাহলে তো ইসরো-তে আমার চাকরি পাকা ঘন্টুদা, আমার এখন মেকানিক্যাল তৃতীয় বর্ষ চলছে, সব সেমেস্টার-এই কিন্তু ৭০ শতাংশ-এর বেশি নম্বর পেয়েছি।
এতো সহজ তো নয় নান্টুবাবু। এই প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হতে গেলে তোমাকে একটি সর্বভারতীয় লিখিত প্রবেশিকা পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হতে হবে। সেখানে সফল প্রার্থীদের তারপর একটি ইন্টার্ভিউ-এর জন্য ডাকা হবে। সেখানেও সফল হতে পারলে তবে তুমি ইসরো-তে বৈজ্ঞানিক পদে নিযুক্ত হতে পারবে।
ওরে বাবা , এত কিছু করতে হবে? তা কি করে আবেদন করব?

এখন তো সব জায়গাতেই অনলাইন আবেদন করতে হয়। ইসরো-র ওয়েবসাইট-এই এইসব নিয়গের বিজ্ঞপ্তি বেরোয় আর সেখানেই আবেদন করতে হয়। ওয়েবসাইট-টি হল https://www.isro.gov.in/career। দেশের মধ্যে মাত্র বারোটি জায়গা থেকেই এই প্রবেশিকা পরীক্ষাটি দেওয়া যায়। সেগুলি হল- আমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালুরু, ভোপাল, চণ্ডীগড়, চেন্নাই, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, লখনৌ, মুম্বই, দিল্লী এবং তিরুবনন্তপুরম। চেষ্টা করিস নান্টু, শুধু উচ্চমানের কাজ নয় ওখানে বেতন ও বেশ ভাল কিন্তু; শুরুতেই প্রতি মাসে ৫৬১০০ টাকা।
আচ্ছা ঘন্টুদা, ওখানে শুধু কারিগরি শাখার ছেলেমেয়েরাই সুযোগ পায়?
না না, সেটা নয়। তোর মতন পদার্থবিদ্যা-র ছাত্রছাত্রীও সুযোগ পায়। তুইও চেষ্টা করতে পারিস ঝন্টু।
শুধু চাকরি কেন ওখান থেকে স্পেস সাইন্স ও টেকনোলজি-র বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণাও করতে পারিস। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি ডিপার্টমেন্ট অফ স্পেস এর অধীনে ইন্ডিয়ান ইন্সিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আই আই এস টি) প্রতিষ্ঠানটি থেকে স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ওপর স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ করা যায়। এই বিষয়ে বিশদে জানতে হলে https://www.iist.ac.in/admission/ ওয়েবসাইট-টি দেখতে পারিস।
অসংখ্য ধন্যবাদ ঘন্টুদা। তোমার থেকে আবার আমরা বিজ্ঞানের জীবিকা সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারলাম।
উৎসাহী পাঠকদের জন্য: [১] অ্যাস্ট্রোস্যাট নিয়ে আরো জানতে এই লেখাটি পড়ুন: https://bigyan.org.in/2016/02/01/astrosat/।
The post ঘন্টুদার দপ্তর – ইসরো appeared first on বিজ্ঞান - বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের এক বৈদ্যুতিন মাধ্যম (An online Bengali Popular Science magazine).